গতকাল ছিল আমার জন্মদিন।
আকাশে হেমন্তের সূর্য যখন আগমনী গান গাইছে, ততক্ষণে শিশিরের লাজুক অভিসারিকারা বিদায় নিয়েছে। স্কুলে সর্বশেষ পরীক্ষা। অজস্র শিক্ষার্থী শিক্ষক আমাকে জানিয়েছে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। এত অগনিত শিক্ষার্থীর ভালবাসা এই পৃথিবীতে এসে আমি পেয়েছি। যে এই নশ্বর পৃথিবীতে মাঝে মাঝে বেঁচে থাকারও সাধ জেগে উঠে।
নাইম স্যার হঠাৎ রেডি হয়ে এসেছেন। আমরা জৈনা যাব। কেন যাব, সেটা ক্লিয়ার না। আমি অফিসের কিছু কাজ সেরে নিলাম। যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। সা সাঁ শব্দে বাতাস কেটে কেটে পথ চলছি। রাস্তার পাশে হৈমন্তিক ব্যস্ততা। ধান মাড়াইয়ের ধাম ধাম শব্দ, বাতাসে দোল খাচ্ছে সবুজ পাতার শাখা পল্লব। হো হো করে বাতাসের কণাগুলো সঙ্গী হচ্ছে আমাদের। জৈনা গেলাম। সেখান থেকে মাওনা। নাঈম স্যার আজ ট্রিট দিচ্ছেন। কাচ্চি বিড়িয়ানীর চমৎকার একটা ডিশের সামনে তিনি আমাকে জন্ম দিনের শুভেচ্ছা জানালেন। একটা অসাধারণ প্রসংসামাখা পোস্ট করে আমাকে লাইব্রেরির তকমাও দিলেন। (এটা একটু বেশিই বলেছেন অবশ্য)
ইতোমধ্যে গুগল ম্যাপ বাহার আমার বাসা আবিষ্কার করে ফেলেছে। সে বাসায় উপস্তিত। আমি মিশুকে বললাম তাকে অপেক্ষা করাতে।
আমরা বাসায় ফিরছি। মায়ের সাথে কথা হয়েছে। আমি বাড়িতে যাব। আমার মায়ের সাথে একটু দেখা না হলে আজ আমি খুব কষ্টে থাকবো।
সন্ধ্যার শেষাশেষি। জাগতিক ব্যস্ততা শেষ। আমি বাড়ি যাচ্ছি। মধ্যরাস্তায়, মাসুদ স্যারের ফোন। জরুরী কাজে স্কুলে যেতে হবে। কিন্তু যে কোন মূল্যে আমাকে আজ বাড়িতে যেতেই হবে।
মোবাইল ডাটাশুন্য। জন্মদিন উপলক্ষ্যে হয়ত কোন প্রভাব পড়েছে সোশ্যাল সাইটে।
শত অফিশিয়াল চাপের বেড়াজাল ছিন্ন করে আমি বাড়িতে পৌছালাম। এবং দুদন্ড শান্তি নিয়ে প্রায় সাথে সাথেই আবার অফিসে আসলাম। শীতের রাতে বরফশীতল হয়ে জমে যাচ্ছিল রাকিব স্যার। আর আমিও। সে ও যথেষ্ট পরিশ্রম করে প্রায় মধ্যরাতে বাড়ি ফিরেছে।
বলা চলে জন্মদিন শুভ হয়েছে।
আমাকে অজস্র গুরুজন,প্রিয়জন,বন্ধু,ছোট,শিক্ষার্থী শুভেচ্ছা জানিয়েছে। তাদের প্রতি আমি অতি কৃতজ্ঞ। আমার মতো ছোট্ট একজন মানুষকে আপনারা মনে রেখেছেন। একই গ্রহে যেখানে অন্য মানুষ ব্যথিত হলেই আত্মতৃপ্তি পায়, আপনারা আমার শুভাকাঙ্ক্ষী হয়েছেন। আমাদের পৃথিবী সুস্থ্য হোক।
ধন্যবাদ হে পৃথিবীর মানুষ।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ।